মেঘের চিরকুট
আয়েশা ওয়াহেদ
আবির, ছাড়না।টেনে টেনে চুল সব ছিঁড়ে দিলি আমার। একেবারে ডাবু করে দে না!!
তুই চুপ কর! এই নে এটা হলো ১০ নাম্বার। সাইজ দেখ ব্যাটার৷
ইয়াক্, আবির তুই এত খবিশ কেনো বলতো? সপ্তাহে একটাই দিন তাড়াতাড়ি ক্লাস শেষ হয় আমাদের। কোথায় একটু গিয়ে ঘুম দিবো, তা না! তুই একটা.....তোকে নিয়ে আর পারলাম না। এটা কেমন স্বভাব বলতো? জীবনে তোর মতো ছেলে দেখিনি। কীভাবে যে মেডিকেল সায়েন্স এ পড়াশোনা করা একটা মানুষ তাও একটা ছেলে হয়ে উঁকুন বের করার মত কাজ করে কে জানে। আচ্ছা তোর কী আর কোনো কাজ নেই ? উকুন ধরার নামে আমার মাথার চুল টানা ছাড়া?
আবির আরও জোরে টান দিলো আনিশার চুল ধরে। "নে ধর, ১৫ টা হল। কালকে কিন্তু পনেরটা কিটক্যাট দিয়ে দিবি বলে দিলাম। আমাকে খবিশ ডাকা হচ্ছে তুই তো নিজেই একটা খবিশ। এতো সুন্দর লম্বা চুল আর তুই কিনা এখানে উকুনের চাষ করে বেড়াচ্ছিস। অবন্তীর ও আছে তোর মত উকুন চাষের ঝোক। যখন বাড়িতে থাকতাম ওকে প্রচুর বকা দিতাম। চুল ছেড়ে দিয়ে ঘুরতো সারাবাড়ি। একবার তো আমার জন্য জুস বানিয়ে এনেছিল দেখলাম জুসের উপরিতলে উঁকুন ভাসছে৷ তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম। "
কী সিদ্ধান্ত ?
কী আবার, সেদিন রাতেই কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছিলাম ওর লম্বা চুলগুলো।৷
মানে কী? তুই ওর চুল কেটে দিলি কেবল তোর গ্লাসে উঁকুন পড়ায়?
হুম। তুই ও ওর মত। খবিশ একটা। নাহ খবিশ না। খবিশিনী। আচ্ছা আজ রাতে বাংলা ডিকশনারি থেকে খুঁজে বের করিস তো খবিশিনী নামে কোনো শব্দ আছে কিনা, থাকলে ওটাই তোর নাম হবে আজ থেকে।
মানে? তুই বরং একটা কাজ কর।
অবন্তীর মতো আমার চুলগুলো ও কেটে দে। তাহলেই বাঁচি তোর হাত থেকে।
নাহ তোর চুল কাটা যাবেনা।
কেন শুনি?
কেন আবার, সবাই হাসাহাসি করবে তো । এটা আমার সহ্য হবেনা। তাছাড়া আরও কিছু ব্যাপার আছে।
আবার কী ব্যাপার?
নিজের মানুষের যত্ন করতে হয়।
থাক, আর তেল দিসনা। প্রতিদিন তো টাকা মেরে খাস আমার। আবার কথা কেমন নিজের মানুষ।
নিজের নয়তো কী তো?কম করে হলেও আগামী ছয় বছর তো অবশ্যই।
তারপর দুজনে হাঁটতে থাকে।
আবির, আর আসিস না৷
কেনো?
কেনো আবার? গার্লস হোস্টেল, তাই।
শোন,তোর হোস্টেলে যাওয়ার কোনো শখ নেই আমার। আমার হোস্টেলে যেতে হলে এমনিতেও এই রাস্তা ধরে যেতে হয় তাই আসলাম।নাহলে কেউ আসে নাকি মেয়েদের হোস্টেলে হেহ।
সামনে তাকা।
কেনো?
আরে তাকা না।
আনিশার কথায় সামনে তাকাতেই আবির দেখতে পেলো একদম গার্লস হোস্টেল এর গেইটের সামনে এসে পড়েছে। কথা বলতে বলতে আসছিল তাই আর খেয়াল করেনি। আনিশা দাঁড় করিয়ে না দিলে সে প্রায় ঢুকেই পড়েছিল। চারপাশে তাকাতেই আবির দেখতে পেল দারোয়ান আংকেল হিংস্র চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। আনিশা হেসে দিল।
"আবির, তুই দাঁড়া আমি তোকে অ্যানাটমির বইটা দিয়ে যাচ্ছি । পাঁচ মিনিট লাগবে। " এই বলে দারোয়ান আংকেলের দিকে তাকাতেই উনি চোখটা নিচে নামিয়ে ফেললেন।
"চাচা, আমার বন্ধু আবির। বই নিতে এসেছে। "
"ও আচ্ছা, আমি আরও ভাবছি ওনার দৃষ্টিভ্রম হইসে হের লাইগা পোলাগো হোস্টেল মনে কইরা এহানে চইলা আইছে। যাও মা যাও। নিয়া আসো বই"।
"আচ্ছা, চাচা গেলাম ।এই পেঁচা, তুই দাড়া। "
আবির মুখ কুচকিয়ে কিছু একটা বলতে চেয়েছিল কিন্তু দারোয়ান আংকেলের সামনে থাকায় কিছু বলেনি। আনিশা হেসে উপরে চলে গেল।
"চাচা, আসেন চকলেট খাই।
ধরেন, একটা আছে।আমি অর্ধেক আপনি অর্ধেক। "
প্রথমে ইতস্তত করলেও পরে আবার নিয়ে নিলেন চাচা। চকলেট খেয়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে একগাল হেসে দিলেন।
এর মধ্যেই আনিশা চলে আসল। "কি রে, এখানেও চকলেট নিয়ে বসে পড়লি নাকি??" "আর চাচা, আপনার তো মনে হয় বত্রিশ নাম্বার দাঁতেও পোকা ধরে গিয়েছে। এই অবস্থায় ও চকলেট?
না, মাইনে ব্যাপারটা হইলো গিয়া আমি খাইতে চায়নাই এই পোলাটা দিল আরকি।
বাহ, তোর তো আর কোনো কাজ নাই। রাক্ষস একটা, নিজের ক্ষতি করে শান্তি নেই এই বুড়ো মানুষটার ও দাঁতের বারোটা বাজাচ্ছিস।
আরে পাগলী,ওনার দাঁতের বারোটা অনেক আগেই বেজে গিয়েছে৷ আমিতো শুধু মিনিট পনেরো এদিক সেদিক করে দিলাম।
যা ভাগ, শয়তান একটা। যা, হোস্টেলে যা।
আচ্ছা আসি। আর শোন ওই শব্দ টা খুঁজে দেখিস কেমন?
মানে??
ওই যে, খবি....
চুপ কর শয়তান। যা ভাগ।
পরদিন সকালে একটা ক্লাস অফ থাকায় মাঠে বসে গল্প করছিল সবাই। এমন সময় '১৬ ব্যাচের রিয়াদ ভাইয়া এসে হঠাৎ আনিশাকে ডেকে নিয়ে গেল। আবির ব্যাপারটা খেয়াল করল।
"হাই আনিশা "
"জি, ভাইয়া বলেন। "
"না মানে আমি বলতে এসেছিলাম তুমি....মানে আমি...আই মিন...(এমন সময়ে আবির পেছন থেকে আসল)সাথে সাথে রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠল মানে আবির অনেক সুন্দর তাই না??"
হ্যা, তো?ওই যে আবির এসেছে। আবিরকেই বলেন কথাটা সরাসরি।
সাথে সাথেই আবির বলে উঠল, " আনিশা, কাল কী বই দিয়েছিলি আমায়?"
"কেন অ্যানাটমির সেকেন্ড পার্টের বইটা।"
"ওটা বই নাকি মৃত উকুনের সংরক্ষনাগার?"
"মানে কী আবির?"
"মানে পুরো বইয়ে উকুন মেরে মেরে ওদের লাশ গুলো চাপা দিয়েছিস তুই। টেবিল ফ্যান অন করে যেই খুলেছি তোর বইটা অমনি উকুন সব উড়ে গেল।"
"আবির!কী বলিস এগুলো?"
সবাই শুনে হাসতে লাগল।
আনিশা রেগে চলে গেল৷ সাথে সাথে রিয়াদ জিজ্ঞেস করল,"আচ্ছা আবির,এটা কী সত্যি?"
কোনটা?
উঁকুনের ব্যাপারটা!!
ভাইয়া,
আমার ব্যাগে বইটা আছে। এখনো রক্তের দাগ আছে। দেখবেন?
মেয়েটা বড়ই পাষাণ বুঝলেন। উঁকুনগুলোকে কম্পাস দিয়ে থেতলে থেতলে মেরেছে৷ বইটাতে অনেক গুলো ফুটোও আছে ভাইয়া। দাঁড়ান দেখাই৷
ইয়াক, থাক থাক লাগবে না।
বমি আসছে আমার।
ভাইয়া কী প্রপোজ করতে এসেছিলেন নাকি?
না না না। এই মেয়েকে প্রপোজ কখনই না। ছি ছি ছি।না জানি আমাকেও থেতলে মেরে ফেলে উকুনের মত। থাক, আমি গেলাম।
এরপর ছুটতে ছুটতে গেলো আনিশাকে খুঁজতে । দেখল মাঠের একপাশে গাছের নিচে পা ঝুলিয়ে বসে আছে।
পাশে গিয়ে বসল আবির।
আনিশা শোননা।
বল।
ওটা বের করেছিলি?
কোনটা?
আরে ওটা আরকি।
ওটা কোনটা হতচ্ছাড়া, নাম নেই ওটার?
ওই যে খবিশিনী?
আবির!
আচ্ছা সরি যা।
তুই সবার সামনে আমাকে এভাবে হাসির পাত্র বানালি আবির।মানে একটা মানুষকে কত কিছু বলে অপমান করা যায়।তুই বলতে পারতি আমি গতকাল পড়া পারিনি বা সেদিন যে সিড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিলাম সেটাও বলতে পারতি৷ সবাই হাসলেও আমি কিছু মনে করতাম না। শেষমেষ উকুন নিয়ে.......
আবির, অন্তত আমার উকুনগুলো তোর থেকে ভালো আছে৷ "উফাদারি" নামক সৌজন্যবোধ আছে তাদের। অন্তত আমার মাথার মধ্যেই থাকে। আজকে প্রায় দুবছরে কখনও কারো মাথায় ট্রান্সফার হয়নি৷ কত লয়াল দেখ। আর তুই?
আমার উকুন নিয়ে আমাকেই......তাও সবার সামনে।
বলা শেষ তোর?
এবার আমি বলি?
একে তো সিনিয়র রিয়াদ ভাইয়া, তার ওপর গোটা কলেজের সবাইকে ডেটিং করে ছেড়েছে৷ "খবিশিনী, তোকে ও ডেটিং করতে এসেছিল। আমি যদি উকুনের ব্যাপারে এভাবে তোকে না পচাতাম এতক্ষণে তুমি ওনার সাথে থাকতা খবিশিনী একটা।
কী?সত্যি নাকি?
দাঁড়া, ওনাকে ডেকে নিয়ে আসি। নিজেই যাচাই করে নিস। আর আমাকেও তোর সাথে নিয়ে যেতে হবে ট্রিট দেওয়ার জন্য৷
চুপ কর গাধা।আর কী বলেছিস ওনাকে?
বলেছি, তুই এর আগে আরো দুটো ছেলেকে ডেটিং করেছিস আর তাদেরকে উঁকুন নিধন পদ্ধতিতে কম্পাস দিয়ে গুতা দিয়ে দিয়ে মেরেছিস এবং ওরা এখন হাসপাতালে।
আবির।উনি এটা মেনে নিয়েছে বলে মনে হয়না।
সেটা বলতে পারিনা। তবে উঁকুনের ব্যাপারে ছাড় দিবে বলে মনে হয়না। আর আসবে না তোর কাছে। এটা নিশ্চিত থাক।
বাহ।
এখন কী সারাদিন এখানে বসে থাকবি নাকি কিছু খাওয়াবি?
খিদা লেগেছে।
আগে উঁকুন বেছে দে বিশটা।
খবিশিনী আসলেই তুই একটা। আয়।
এভাবেই চলতে থাকে আবির আনিশার বন্ধুত্ব। মাত্র এক বছর আগেই পরিচয় হয় এদের। সপ্নের টানে দুজনেই এসে এক হয় খুলনায়। খুলনা সরকারি মেডিকেল কলেজ। তারপর সময়ের সাথে সাথে বন্ধু হয়ে যায় তারা। সময়ের গতিময়তা তাদের বন্ধুত্বকে অধিক প্রানচঞ্চল এবং সাবলীল করে তোলে। ওই যে আমরা বলি না গলায় গলায় ভাব, একদম সেই প্রকারের বন্ধুত্ব। আবিরের জীবনে এমন কোনো ব্যাপার নেই যা আনিশা যানে না। সব কিছুই বলে সে আনিশাকে। আনিশাও হয়তো তেমন।
এভাবে দেখতে দেখতে আরো তিনটা বছর কেটে যায়।আনিশা হঠাৎ বুঝতে পারে এখন সময় হয়েছে। আর দেরি করা চলবে না.......
নভেম্বরের দিকে প্রচুর ঠান্ডা পড়ছিল। আবিরের অবস্থা তো দেখার মতো। সকালের ক্লাস করতে এসেছে দুটো সোয়েটার, হাত মৌজা, পা মৌজা আর টুপি মাথায় দিয়ে। একেবারে শীতে জবুথবু হয়ে ক্লাসে হাজির সে। বেলা বাড়তেই সব খুলে আনিশার ব্যাগে রেখে চুপচাপ কেটে পড়ে আবির। এটা আবিরের পুরনো অভ্যাস।
"আবির, শোন না। ভাবছি আজকে আমাদের কলেজের মেইন গেইটের সামনে যে পাগল লোকটা শীতে জবুথবু হয়ে প্রায়ই সময় বসে থাকে, ওনাকে কিছু শীতকালীন বস্ত্র দান করব। কি বলিস আইডিয়া টা কেমন?
আইডিয়া তো মন্দ নয়।
তা, উনাকে কী তোর লং কোর্ট আর লেডিস জিন্স গিফট করবি নাকি তোর ওই "কোয়ি মিল গ্যায়া " টাইপসের হুডি ওয়ালা সোয়েটার টা???
আরেহ না, আমার ব্যাগভর্তি ব্র্যান্ডেড সোয়েটার থেকে শুরু করে হাত-পা মৌজা থাকা সত্ত্বেও আমি কেন নিজের গুলো দিয়ে দান করব? তাছাড়া এগুলো আমার কাঁধ ভারী করে রেখেছে। উনাকে দিলে উনি সারাদিন পরে বসে থাকবে এবং দোয়া করবে। আর দেখবি ওনার দোয়ায় তুই সামনের কোনো এক পরীক্ষায় প্রথম হয়ে যাবি।
"চল বন্ধু দান করে আসি, চল"।
তবে রে, তোকে আজকে আমি তোর মাথার উঁকুন খাওয়াব দাঁড়া তুই।আমার কাপড় তাও শীতে আমার একমাত্র অবলম্বন, ওগুলো দিয়ে তুই চ্যারিটি করবি, দাঁড়া তুই। আজকে তুই শেষ।
এরপর দৌড়াতে থাকে আবির আনিশাকে। দৌড়াতে দৌড়াতে মাঠে এসে থামে।
"আবির, এই অভ্যাসটা বাদ দে বুঝলি। কয়েক ঘন্টার শীত থেকে বাঁচার জন্য সারাদিন এতো এতো শীতবস্ত্র নিয়ে আমাকে দৌড়ানোর কোনো মানে হয়না।
" আরেহ, আমি প্রতি রাতে ওগুলো পড়ে ঘুমাই। আর সকালে ওগুলোর কারণেই এই হিমশীতল পরিবেশের মধ্যেও ক্লাস করতে আসতে পারি। ওগুলো একদিন না পড়লে দেখবি আমি ঠান্ডায় আইসক্রিম হয়ে গেছি।"
আবির, তুই একটা পাগল, তুই কী এটা জানিস?
হুম প্রতিদিন কানের কাছে "তুই পাগল তোর....." এরকম টেপরেকর্ডার বাজালে আমি তো এমনিই নিজেকে পাগল ভাবা শুরু করব। "
তারপর দুজনেই হাসতে লাগল। বিকেলে মাঠে ব্যাডমিন্টন চলছিল। আবির কিছুমাত্র না ভেবে বইপত্র, ব্যাগ সব আনিশাকে দিয়ে খেলতে নেমে গেল। সন্ধ্যা হওয়ার কারণে আনিশা হোস্টেলের দিকে হাঁটতে লাগল। তারপর মনে মনে ফন্দি আটল আবিরকে শিক্ষা দেওয়ার। তাই আবিরের সব কিছু নিয়েই সে নিজ হোস্টেলে চলে আসল।
ওদিকে সাড়ে সাতটা বাজে হোস্টেলে ঢোকার কারণে হোস্টেল সুপার আবিরসহ আরো কয়েকজনকে আধ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখল।
পরের দিন ভোর চারটা থেকে আবির কল দেওয়া শুরু করলো আনিশাকে।
"আনিশার বাচ্চা, আমার বইপত্র, ব্যাগ নিয়েছিস ঠিকাছে, হতচ্ছাড়ি আমার শীতকালীন বস্ত্রগুলো নিয়ে কেনো ভেগেছিস?"
ওহ, এই ব্যাপার। ওগুলো আমি ওই লোকটাকে দিয়ে দিয়েছি।
দিয়ে দিয়েছিস মানে?
ওই যে কালকের লোকটাকে দিয়েছি। কালকে ফেরার সময় অনেক ভারী লাগছিল ব্যাগটা। তাই ওগুলো ওনাকে দিয়ে দিয়েছি।
আনিশা, আমি আজ ক্লাসে আসবো না। আসলেও দশটার পড়ে।
দুটো ক্লাস গ্যাপ দিবি?ভেবে বলছিস তো আবির?এটা করলে কিন্তু রেকর্ড ভাঙবি তুই তোর।
হুম সত্যি। আসব না আমি, তুই আগে আমার সোয়েটার আনবি।
আনিশা হেসে উড়িয়ে দিলো ব্যাপারটা। হেহ দেখবো কীভাবে হায়দার স্যারের ক্লাস বাদ দিস তুই। আবির দুটো ক্লাস বাদ দেবে এটা অসম্ভব।
আনিশা আমি সিরিয়াস কিন্তু।
যা ভাগ।
এত বছর যা করেনি আবির, এই প্রথম তাই করল। ক্লাসে তো এলোই না, তার ওপর সারাদিন কোনো খবর নেই। বুঝতে পেরেছে আনিশা ব্যাপারটা। আবির সত্যিই খেপেছে নাকি।
সন্ধ্যার আগে আগে আনিশা আবিরের হোস্টেল এর সামনে গিয়ে তাকে কল দিল। "আবির, নিচে আয় তো একটু. "
না আসবো নাহ।
আয় না প্লিজ।
নাহ।
তোর শীতবস্ত্র নিয়ে যা, ওগুলো নিয়ে এসেছি।
অসম্ভব।
কেনো?
বাইরে প্রচুর ঠান্ডা। তার ওপর শীতবস্ত্র ছাড়া আমি বেরোলে জমে যাব। নাহ, আমি আসব না। (আসলে ঘটনা ছিলো আবির পা ভেঙে ফেলেছে কিছুক্ষণ আগে,এখন আনিশাকে বললে সে আবার চিন্তা করবে ভেবে নিচে আসতে চাইছিল না।)
আবির, আমি সত্যিই চাই তুই আয়।
নাহ,আসব না।
তাহলে কাউকে পাঠা এগুলো নিয়ে যাক।
হু,সেটা করতে পারি।
হুমম।
একটু পর আবিরের রুমমেট এসে কাপড় এবং বইগুলো নিয়ে গেল।
আনিশা কিছু না বলেই মন খারাপ করে চলে গেল। মনে মনে বলল,"আজ তোকে বেশি দরকার ছিল রে আবির। আর তুই-ই আসলি না। "
এদিকে আবির কয়েকদিন ক্লাসে আসতে পারল না ভাঙা পা নিয়ে।
তিন দিন পর...
চাচা,আনিশার কোনো খোঁজ জানেন?
না তো বাবা,তারে তো গত দুইদিন ধইরা দেখতাসি না।
ও আচ্ছা।
কেন,বাবা?
কিছু হইসে?
না চাচা,আসলে গত কয়েকদিন ধরে দেখা হয়নি তো তাই।
ওহ,তই তারে ফোন কইররা দেহো।মোবাইল নাম্বার দেয় নাই??
করেছি তো চাচা,তিন দিনে হাজার বার কল করেছি। মোবাইল বন্ধ বলেছে।
ওহো,মুই ও তারে কবে দেখসি মনে নাই বাবা। আর ছুটি নিয়া যাইলে তো হোস্টেল সুপার জানবো এই বিষয়ডা। তুমি ওনার লগে কথা কইয়া দেখবার পারো। তাছাড়া এহনতো আবার তোমাগো শীতের ছুটি চলে এক সপ্তাহের। হয়তো সেই জন্য সে বাড়িতে গেছে।
না চাচা,ওরকম হলে আনিশা আমাকে বলে যেতো। ও কখনোই এমন করেনা। হুট করে না বলে কোথাও চলে যাওয়ার মেয়ে না আনিশা।
থাক বাবা, মন খারাপ কইরো না। হয়তো জরুরি কুনো কাজে তাড়াহুড়া কইরা চইললা গেসে। তাই জানায় নাই। তোমার পায়ে কি হইসে বাবা?
ওহ,ব্যথা পেয়েছিলাম পায়ে। এটার জন্যই তো এতদিন ক্লাসে আসিনি।
ওহ,তই বাবা বসো এহানে। চকলেট আছেনি?
হতাশ আবির একটু হাসল।"ধরেন চাচা, ব্যাগে ছিল এই দুটো৷ আনিশা দিয়েছিল কখন যেন, আপনি এগুলো রাখেন"।
তুমি খাও একটা।
না চাচা,আজ আপনি নিন দুটোই। আজ খেতে ইচ্ছে করছে না। মনটা বেশি ভালোনা।
আচ্ছা বাবা,আমি কোনো খবর পাইলে তোমারে জানামু। তুমি চিন্তা কইরো না।
হুম।আসি চাচা।
যাও বাবা।
এভাবে অনেকদিন কেটে যায়।
আবির অনেক বার ব্যর্থ চেষ্টা করে আনিশাকে কল করার। কিন্তু, বরাবরের মতই ফোন অফ।এই কয়েকদিনে আবিরের একটা নতুন অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। এখন যেহেতু ছুটির সময় তাই হোস্টেলে টাইম-টু-টাইম নিয়মকানুন শিথিল করা হয় একটু। এই সুযোগে মনমরা আবির প্রতিদিন রাতে হাঁটতে বের হয়। প্রতিদিন নিয়ম করে আনিশার হোস্টেলের দারোয়ান চাচার সাথে কথা বলে সে এবং রাতে আনিশার হোস্টেলের সামনে পেছনে চক্কর দিয়ে আসে। আনিশা সেকেন্ড ফ্লোরের কোণার দিকের রুমটায় থাকতো,যেটা দোতলার করিডোরের সাথে লাগানো। যে কেউ চাইলে সহজেই পাইপ বেয়ে আনিশার ঘর অব্দি উঠে যেতে পারবে। নিচে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করলো আবির। আবার ভাবল, থাক দরকার নেই। এ কাজ করে কী লাভ যখন আনিশাই গায়েব!
তারপর হেঁটে চলে আসল। সারারাত আনিশার " উকুন সংরক্ষণাগার নিয়ে ঘাটাঘাটি করলো। আপন মনেই পুরোনো স্মৃতি গুলো ভেবে হেসে উঠল। আর খুব রাগ এবং অভিমান করলো আনিশার ওপর। সীমাহীন অনিশ্চয়তার মধ্যেও আবিরের কেন জানি মনে হচ্ছিল আনিশার সাথে ওর দেখা হবেই খুব শীঘ্রই।
সেদিন ভীষণ ঠান্ডা পড়ছিল। বরাবরের মতোই আবির হাঁটতে বেরোয়। নিয়ম মতো আনিশার হোস্টেলের সেই কোণাটার দিকে এগোচ্ছিল এমন সময় খেয়াল করল কেউ একজন আনিশার রুম বরাবর দোতলার পাইপ ধরে উপরে উঠার চেষ্টা করছে। তার চেহারা দেখা যাচ্ছিল না কারণ আবির তাকে পেছন দিক থেকে দেখেছিলো। তাছাড়া অন্ধকার আর কুয়াশাতো ছিলই। যার কারণে ভালো করে দেখা যাচ্ছিল না ওপরে। তখনই হঠাৎ একটা মেয়েলি কন্ঠস্বরে কে যেন বলে উঠল, "চাচা, ব্যাগটা দিন তাড়াতাড়ি "। কন্ঠটা আবিরের খুব পরিচিত মনে হলো ৷ তবে কাহিনীর শেষটা দেখার জন্য ব্যাগটা তুলে দিল আবির। শরীর বাকিয়ে যেইমাত্র ব্যাগটা ধরল
সেই মেয়েলি কন্ঠের মানুষটা সাথে সাথেই ভারসাম্য হারিয়ে পা ফসকে নিচে পড়ে গেল। আবির চাইলে ধরে ফেলতে পারতো কিন্তু চোর মনে করে ধরেনি । বরং চোর চোর করে চিৎকার দিয়ে উঠল । ছুটি থাকার কারণে তেমন কেউই ছিলোনা হোস্টেলে। তাই আবিরের চিৎকারে কেউ ছুটে না আসলেও দারোয়ান চাচা ছুটে আসলো । মুখ ফিরিয়ে তাকাতেই আবির যা দেখল, তা দেখার জন্য সে মোটেও তৈরি ছিলোনা।
আনিশার হাত দুটো একেবারে ছিলে গেছে ইটের সাথে ঘষা খেয়ে। অন্য কোথাও তেমন চোট পায়নি। দারোয়ান চাচা এসে ধরে বসালো আনিশাকে। আবির তখনো হিম হয়ে একেবারে জমে আছে। যেন ভূত দেখেছে।
চাচা,আপনি এতক্ষণ এখানে ছিলেন না?
না, মা আমিতো হোস্টেল সুপার আছে কিনা দোতলায় চেক করতে গেসিলাম। তোমারে কইয়া গেসিলাম, আমি না আসা অব্দি অপেক্ষা করবার জন্যে। তুমি তার আগেই উইটটা গেসো।
ওহ,আমি খেয়াল করিনি চাচা। দেয়ালে মানুষের ছায়া দেখে আপনি মনে করেছিলাম। আর এই হতচ্ছাড়া শেষ মূহুর্তে এসে এক চিৎকারে সব শেষ করে দিল। আবিরের বাচ্চা, হা করে দেখে আছিস কেন এখনো?
আমি আনিশা। আর এত জোরে চিৎকার দিলি কেন
গর্দভ?
এতক্ষণে আবিরের ঘোর কাটলো। আনিশা তুই এখানে? আমি আরো চোর ভাবলাম তাই ধরিনি পড়ে যেতে দেখেও।
পরে বলব, আগে আমার হাত পায়ের যে বারোটা বাজিয়েছিস সেগুলোর ব্যবস্থা করি।তারপর তোকে দেখে নিচ্ছি।
পরদিন সকালে আনিশার ঘুম ভাঙলো ফোনের একটানা ভাইব্রেশন শুনে।দেখল আবিরের একশ নয়টা মিসড কল। এমনিতেই গত রাতের ঘটনায় আবির ক্ষেপেছিল আনিশার ওপর। আর এখন একশ নয়টা কল মিস করার পর আবিরের ভয়াবহ রাগের কথা একবার কল্পনাা করল আনিশা। তারপর দ্রুত ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসার পর দেখল আবির তার কল্পনার চাইতেও বেশি রেগে আছে। আনিশার মুখোমুখি হওয়া মাত্রই আনিশাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওর সোয়েটারের হাতা ধরে এক প্রকার টানতে টানতেই নিয়ে গেল। তারপর ইচ্ছেমতো মনের ঝাল মিটিয়ে আধ ঘন্টা ধরে অনেক কিছুই বলল।
"তুই একটা শয়তান,গর্দভ মেয়ে। তোকে আমি আজকে মেরেই ফেলব...."আনিশা হুডি পড়া অবস্থায় ছিল। আধ ঘন্টা পর আনিশাকে চুপচাপ এবং আনমনা দেখে আবির ওর মাথায় মেরে বলল, " আমি এতক্ষণ বকবকিয়ে যাচ্ছি আর তুই হাসছিস বসে বসে।"
আই নিড এক্সপ্লানেশন আনিশা। গত দশ দিনের জবাবদিহি চাই আমি।
আনিশা হুডির ভেতর থেকে হেডফোন খুলতে খুলতে বললো, " হ্যা, কি জানি বলছিলি আবির?আমি এতক্ষণ গান শুনছিলাম। "
তুই এতক্ষণ আমার একটা কথাও শুনিসনি?
আনিশা একগাল হেসে বলল,"নাহ,শুনিনি"।
এতদিন ধরে জমিয়ে রাখা রাগ,অভিমান সব কিছু মিলিয়ে আবির আর কিছুই বলল না আনিশাকে। উঠে গেল আনিশার পাশ থেকে। এমন সময় আনিশা পেছন থেকে ডাকল। একবার, দুবার অনেকবার। কিন্তু আবির শুনল না।
তারপর আনিশা চিৎকার করে বলল, "আবির, আমি পর্বতারোহণের ট্রেনিং এ গিয়েছিলাম।"
কিসের ট্রেনিং?
পর্বতারোহণ।
মানে
বোস এখানে সব বলছি।
প্রথমে সরি বল আনিশা।
আচ্ছা সরি, বোস এবার৷
তারপর আনিশা শুরু করল।
আবির, পর্বতারোহণ আমার সপ্ন। আমি অনেক আগে থেকেই এই স্বপ্নটা লালন করে আসছি।
তো, মেডিকেল সায়েন্সে পড়ছিস এটা কী?
এটা আমার দায়বদ্ধতা পরিবারের প্রতি,বিশেষ করে আমার মায়ের প্রতি। আর অন্যভাবে বলতে গেলে এখানে আসার পেছনে আমার একটাই লক্ষ্য ছিল সেটা হলো, আমার নিজের সপ্নের দিকে এগিয়ে চলা। আবির, আমি এমন একটা পরিবারের মেয়ে যেখানে পারিবারিক ও ধর্মীয় রক্ষণশীলতাই প্রাধান্য পায়। সেখানে পর্বতারোহণের সপ্ন দেখা কেবল হাওয়ার মধ্যে রাজপ্রাসাদ তৈরির মতই অবাস্তব।আমি বাসায় থাকলে কখনোই পারতাম না এই স্বপ্ন পূরণে উদ্যোগ নিতে । আর বাসা থেকে সম্পূর্ণ প্রেসার ছিলো আমার ওপর হয় মেডিকেল সায়েন্স নয় কিছু না। কিছু না মানে কিছুই না। তাই আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে,যদি বাসা ছাড়তে না পারি তবে সপ্নকে মাটিচাপা দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। আর যদি মেডিকেলে চান্স না পাই তবে সব শেষ।তাই আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি এখানে আসার জন্য।প্রথম কয়েকটা বছর নিজেকে সামলে নিয়েছি বিভিন্নভাবে। আর তুই অনেকটা আশা হয়েই এসেছিলি আমার কাছে। আমাকে চারটা বছর যেভাবে সার্পোট করে গিয়েছিস সেটা আমার সারাজীবনেও কেউ করেনি। আমি বিষয়টা গোপন রাখতে চেয়েছিলাম যাতে করে কোনোভাবে কেউ জানতে না পারে এ ব্যাপারে। এই ভেবে যে যদি কারো মাধ্যমে আমার পরিবার জেনে যায় তখন সব শেষ। তাই আমি কাউকে এটা বলিনি আজ অবধি। এমনকি দারোয়ান চাচাও এটা জানেনা৷ উনাকে আমি অন্যভাবে মানিয়েছি। গত সপ্তাহে আমার প্রথম ট্রেনিং ছিল ঢাকায়। তাই তাড়াহুড়া করেই যেতে হয়েছিল। আর এসেছিও তাড়াহুড়া করেই। বেশি রাত হয়ে গেছে তাই হোস্টেল সুপার না দেখার জন্য গেইট দিয়ে না ঢুকে আমার রুমের পাইপ ধরে উঠে যাচ্ছিলাম। আর তুই...
আমাকে একটাবার বলে গেলে কী আমি মানা করতাম আনিশা?
তোকে বলতে এসেছিলাম। সেদিন তোর শীতবস্ত্র দেওয়ার জন্য নিচে নামতে বলেছিলাম তোকে। কিন্তু তুই আসিসনি। তাই আর বলিনি।
সেদিন আমি পা ভেঙে ফেলেছিলাম আনিশা। তাই তোর সামনে আসিনি। তুই চিন্তা করবি ভেবে।
পা কি করে ভাঙলি?
সে অনেক কাহিনী। বাদ দে।
চল উকুন দেখি এবারে কিন্তু ৩০ টা কিটক্যাট পাচ্ছি। চাচা সেদিন দুটো মেরে দিয়েছে।তাই দুটো বাড়তি দিবি হ্যা
বাই দা ওয়ে, আনিশা চাচা কিন্তু দারুণ নাটক করে।সেদিন কী নাটকটাই না করল আমার সাথে। দু দুটো চকলেট মেরে দিল।
আবির, তোর শীতবস্ত্র কোথায় রে? কাল ও দেখলাম চাদর পড়েছিস আজও দেখলাম তাই। ঘটনা কী রে? ওগুলো কী দান করে দিয়েছিস নাকি?
না রে। সেদিন ওগুলোর জন্যই তো তোর সাথে ঝগড়া করেছিলাম। তাই তুই চলে যাওয়ার পর থেকে ওগুলো আর পড়িনি।
ধুর পাগলা। কাল থেকে যেন আর চাঁদর না দেখি তোর গায়ে। আগের মতোই যেন দেখি তোকে।
সত্যি আনিশা!তুই এ কথা বলছিস?!
হুমম বলছি। তাছাড়া তুই চাইলে আমার হুডিওয়ালা সোয়েটার টাও নিতে পারিস। একদম জাদুর মতো লাগবে। হাহাহা।
খবিশিনী একটা।
এরপর দুজনে মিলে হাসতে থাকে।
আচ্ছা, শোন না, নেক্সট ট্রেনিং কবে?
এইতো এই মাসের শেষ সপ্তাহে।
আবার যাবি তাহলে?
হুমম।
শোন, এবারও হুটহাট গায়েব হবি না তো?
নারে পাগলা। এবার বলেই যাব তোকে।
তিন সত্যি?
হুমম চার সত্যি.....
দেখতে দেখতে আনিশার যাওয়ার দিনও ঘনিয়ে আসে।
আবির আজ আমি চলে যাব। তুই দিয়ে আসবি কেমন?
আচ্ছা।
রাতে কল দিলে রেডি হয়ে আসিস।
কয়টায় সময়?এইতো নয়টা।
আচ্ছা বন্ধু।
রাতে আবির আর আনিশা যখন মুখোমুখি হল আনিশা হতবাক হয়ে গেল আবিরকে দেখে।
আবির!
স্কেটস শ্যু আর ক্লাইমবিং ইকুইপমেন্টস এর ব্যাগ নিয়ে তুই কই যাচ্ছিস?
তোর সাথে আরকি।
মানে?
মানে, "নিজের মানুষের যত্ন করতে হয়।"
তুই ওখানে চলে গেলে আমি এখানে কার যত্ন করব?
তাই ভাবলাম এখানে থেকে আর কাজ নেই আমার। দেখি আমিও এভারেস্ট জয় করে আাসতে পারি কিনা তোর সাথে।
তারপর, দুজনে হাঁটতে লাগলো।
বাসে ওঠার পর আবির দেখলো বাস ভর্তি। আবিরের জায়গা হবেনা। এটা দেখে আনিশা বললো চল নামি।
নামি মানে?কই যাবি?
দেখি কোথায় যেতে পারি
আনিশা কাল না তোর ট্রেনিং জয়েন করতে হবে?
হ্যা,তা তো হবেই। পরের বাস আসতে আধ ঘন্টা বাকি। চল অপেক্ষা করি।
ওহ, সেটাই বল।
আবির শোননা
কি?
নিজের মানুষের যত্ন করতে হয় বুঝলি।
হেহ্ আমার ডায়লগ আমাকে শোনানো হচ্ছে ।
তাতে কী?
মানুষটা তো নিজেরই।
তাইনা?
-সমাপ্ত
ডিজাইন: মো: জাহিদ হাসান
No comments: