মেডিকেল ভর্তি প্রস্তুতি - পর্ব ০১: বিষয়ভিত্তিক







আজ মেডিকেল এডমিশন টেস্টের জন্য জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানের বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব।

জীববিজ্ঞান (৩০ নম্বর):
প্রাণিবিজ্ঞান থেকেই সচরাচর ১৬-১৮টি প্রশ্ন করা হয়, তাই এ বিষয়ে জোর দিতে হবে। প্রাণিবিজ্ঞানের মূল বইয়ের সব বোল্ড লাইন, ছক, বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য, উদাহরণ খুবই ভালো করে আয়ত্ত করতে হবে। মানবদেহ সম্পর্কিত চ্যাপটারগুলোতে (যেমনঃ রক্ত, পরিপাক, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরক্ষা) বেশি জোর দিতে হবে। এসব বিষয়ে নিজের কনসেপ্ট ক্লিয়ার রাখতে হবে। তবে অন্যান্য চ্যাপ্টারগুলোতেও (যেমনঃশ্রেণিবিন্যাস, প্রাণীর পরিচিতি, জিনতত্ত্ব) ভালো প্রস্তুতি রাখতে হবে। কারণ প্রতিটি প্রশ্নই গুরুত্বপূর্ণ। মেইনলি পড়তে হবে আজমল স্যারের বই। সাথে আব্দুল আলীম স্যারের বইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ এক্সট্রা ইনফো জেনে রাখা উচিত।

উদ্ভিদবিজ্ঞান তুলনামূলক বড় এবং কিছুটা বিরক্তিকর। তবুও চান্স পাওয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপটার নির্বাচন করাও কঠিন। কারণ প্রায় সব চ্যাপটার থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুপাতে প্রশ্ন আসে।
তবে সাধারণভাবে অণুজীব, কোষ রসায়ন, নগ্নবীজী ও আবৃতবীজী উদ্ভিদ, উদ্ভিদের প্রজনন, জীবপ্রযুক্তি- অধ্যায়গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলা যায়। আবুল হাসান স্যারের বইই পারফেক্ট। কিছু গুরুত্বপূর্ণ এক্সট্রা তথ্য সংগ্রহ করে পড়ে নিতে পার।

রসায়ন (২৫ নম্বর):
কেমিস্ট্রি কিছুটা কঠিন মনে হয়। তাই পরীক্ষায় পার্থক্য করে দিতে পারে কেমিস্ট্রি অংশে প্রাপ্ত নম্বর। কেমিস্ট্রিতে ভালো করতে হলে বক্স, বোল্ড লাইন, বৈশিষ্ট্য, ব্যবহার, নামীয় বিক্রিয়া, সূত্র ভালোভাবে পড়তে হবে। কোন বিক্রিয়ার সঙ্গে কোন বিজ্ঞানীর নাম জড়িত, কোনটি উপকারী বিক্রিয়া এসব খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি ছোট ছোট গাণিতিক সমস্যা ক্যালকুলেটর ছাড়া কম সময়ে সমাধান করতে হবে। হাজারি স্যারের বই মেইনলি পড়তে হবে। কবীর স্যার এবং গুহ স্যারের বইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ এক্সট্রা ইনফোও কালেক্ট করে পড়ে নিতে পার। জৈব যৌগের ক্ষেত্রে খুব ডিটেইলস লাগে না। জাস্ট গুরুত্বপূর্ণ লাইন, নামীয় বিক্রিয়া, উদাহরণ, পার্থক্য, বিক্রিয়ার ব্যবহার এসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

পদার্থবিজ্ঞান (২০ নম্বর):
একটু ভালোভাবে পড়লে ফিজিক্সে ২০ এর মধ্যে প্রায় পুরো নম্বরই তোলা সম্ভব। কিছু পরিচিত সূত্র এবং যেসব সূত্র ব্যবহার করে সহজে করা যায় এমন কিছু ছোট অঙ্ক প্রশ্নে দেওয়া হয়। তবে থিওরিটিক্যাল পার্ট থেকেই বেশি প্রশ্ন আসে।পার্থক্য, একক, মান, ছক, উদাহরণ, বোল্ড লাইন এসব ভালোভাবে পড়বে। কাজ,ছক, জেনে রাখা ভালো বা বক্স আকারে যেসব তথ্য উল্লেখ থাকে সেগুলোও খেয়াল করতে হবে। আমির-ইসহাক স্যারের বই মেইনলি পড়তে হবে। সাথে তপন স্যারের বইয়ের গুরত্বপূর্ণ এক্সট্রা ইনফো কালেক্ট করে পড়ে নিতে পার। পরীক্ষার হলে কিন্তু ক্যালকুলেটর নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই এমন ম্যাথই দেয়া হবে যা ক্যালকুলেটর ছাড়া করা যায়। কম সময়ে এগুলো সমাধানের জন্য বেশি বেশি চর্চা করতে হবে।

চ্যাপটারের শেষের MCQ সলভ করবে। সব বিষয়েই পড়ার পর বেশি বেশি প্র্যাকটিসের বিকল্প নেই। বাসায় নিজে নিজে সময় ধরে সততার সাথে মডেল টেস্ট দাও। অনলাইন ও বিভিন্ন অ্যাপে রিলাক্সড্ মোডে প্র্যাকটিস কর আর পরীক্ষা দাও। যেখানে ভুল হয় সে রিলেটেড পড়াটা আরেকবার দেখে নাও। আজ যেটা তোমার কাছে অনেক কঠিন, বারবার চেষ্টার পর সেটাই তোমার কাছে অনেক সহজ হয়ে যাবে। তাই হাল ছেড়ো না।আল্লাহর উপর ভরসা রেখে পরিশ্রম চালিয়ে যাও। ইনশাআল্লাহ সফল হবে।


- ইসতিয়াক উদ্দিন মোহাম্মদ তাসকিন
এমবিবিএস প্রথম বর্ষ,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

মেডিকেল ভর্তি প্রস্তুতি - পর্ব ০১: বিষয়ভিত্তিক মেডিকেল ভর্তি প্রস্তুতি - পর্ব ০১: বিষয়ভিত্তিক Reviewed by Catalytic School on August 12, 2020 Rating: 5

No comments:

Search

Powered by Blogger.