Experience Sharing | Medical Admission Test | Israt Jahan Tanima

 


আসসালামু আলাইকুম
প্রথমেই আমি আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে চাই যার অশেষ রহমতে আমি ৪৩৫০ জনের মধ্যে একটি জায়গা পেয়েছি।
আমার জীবনটা আর দশজন সাধারণ স্টুডেন্টের মতো ছিলনা।সেই পারিবারিক ঝামেলাগুলো আমার জন্মের আগে থেকেই চলছিলো।সেগুলো বলে আমি লিখা বড় করতে চাইনা। তবে এইটুকু বলবো আমার অ্যাডমিশন টাইমে আমার বাবা-মায়ের ডিভোর্স হয়।আরো নানা ঝামেলা তো আছেই।এতোসব সমস্যার মধ্যে আমি কিভাবে কি পড়েছি কিভাবে চান্স পেয়েছি এখনো আমার কাছে আশ্চর্য লাগে।
এখানে একজনের নাম একটু না বললেই নয় সেটা হচ্ছে রিজভী ভাই। আমার দুই-তিন মাস ক্লাস,এক্সাম কোথাও কোনো এক্টিভিটিজ না দেখে আমাকে কল দেয়,আমার সমস্যার কথা শুনে নিজেই আমাকে বলে,"সমস্যা আজীবন থাকবে,কিন্তু সময় যেটা চলে যাচ্ছে সেটা আর পাবেনা।সব ইগ্নোর করে পড়তে থাকো।তুমি রেগুলার ক্লাস কর,এক্সাম দাও।ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।"রিজভী ভাইয়ের আমার উপর অনেক আশা ছিল যে আমি চান্স পাবোই।এক্সামের আগের দিন রাতেও আমাকে কল দিয়ে ভাইয়া উৎসাহ দেয়,"তনিমা,তোমাকে নিয়ে তো অনেক আশাবাদী"। সত্যি বলতে কি চান্স না পেলে নিজের চাইতে বেশি আমার উপর যারা আশা করে ছিল তাদের জন্যই বেশি কষ্ট পেতাম।
আর আমার আম্মু আর বড় মামার অবদান তো সবচাইতেই বেশি।আমার মামা না থাকলে আমার পড়ালেখা এসএসসির পরেই শেষ হয়ে যেত।এখনো পর্যন্ত মামাই আমাকে ফিনানশিয়াল থেকে শুরু করে সব সাপোর্ট দিচ্ছে।জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তার অবদান আমি ভুলবোনা।
আমার অ্যাডমিশনের টাইমের চাইতে ইন্টারমিডিয়েটের হার্ড ওয়ার্ক আমাকে চান্স পেতে সাহায্য করেছে বলে আমার বিশ্বাস।
জুনিয়রদের আমার এটাই বলার,অ্যাডমিশন এক্সাম আর ৫-১০টা নরমাল এক্সামের মত না।এখানে ১মি সময়ের হেরফেরের কারণেই কেউ জিতে কেউ হারে।তাই হার্ড ওয়ার্কের চাইতে স্মার্ট ওয়ার্ক,টাইম ম্যানেজমেন্ট-(এক্সাম হলের ১ঘন্টা কিভাবে প্রোপারলি কাজে লাগাতে হয়), বেশি বেশি এক্সাম, প্র্যাক্টিস, সময়মতো খাওয়া, ঘুম, নামাজ। এগুলা মেনে চললেই সাক্সেস আসবেই ইনশাআল্লাহ।
লাস্টে একটা রিমাইন্ডার দিবো,চান্স পেতেও পারি নাও পেতে পারি।চান্স না পাওয়া মানেই লাইফ শেষ নয়।স্বপ্ন সবসময় একটা না কমপক্ষে দুইটা রাখা উচিত।আমার নিজের শুরুতে স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবো।পরে যখন মেডিকেলের প্রিপারেশন নিচ্ছি তখন ভেবেছি চান্স না পেলে সিইউতে জেনেটিক্স পড়বো,এটাও না হলে বাকৃবিতে ঢুকে রিসার্চ করবো। কোনোটাই তো কম না। কে কি বললো তা ভাবলে নিজের জীবন আগাবেনা। সবসময় নিজেকে প্রায়োরিটি দিবে,অন্যকে না।যারা চান্স পায়নি তারা কি প্রতিষ্ঠিত হবেনা? অবশ্যই হবে।একেকজন একেক সেক্টরে যাবে। যদি চান্স না পাও ধরে নিবে তুমি ডাক্তার না অন্য কিছু হওয়ার জন্য ডেস্টিন্ড।তাই চান্স পাওনি। অযোগ্য ভাববেনা কখনো নিজেকে।দিনশেষে সফলতা আসবেই।
আমি আমার মামাকে বলেছিলাম মামা আমি যদি কোনো পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স না পাই তাহলে কি হবে?মামা বলেছে,"কি হবে আর?ন্যাশনালে পড়বা।ন্যাশনালকে ছোট করে দেখার কিছু নেই।আমার সময়ে বিসিএসে যে থার্ড হয়েছিল সে ন্যাশনালে পড়তো।"এখানে একটু বলি আমার মামা ৩৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে চান্স পেয়েছিল।এত কথা বলার একটাই উদ্দেশ্য, ইন্সটিটিউশনের চাইতে ইন্ডিভিজুয়াল পার্সনটাই ইম্পর্ট্যান্ট। নিজের উপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে গেলেই ইনশাআল্লাহ সফলতা আসবে।
 
ইশরাত জাহান তনিমা
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ-৩০ব্যাচ
প্রাক্তন-সরকারী হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজ,চট্টগ্রাম।
 
Experience Sharing | Medical Admission Test | Israt Jahan Tanima Experience Sharing | Medical Admission Test | Israt Jahan Tanima Reviewed by Abdul Hannan Akib on June 16, 2021 Rating: 5

No comments:

Search

Powered by Blogger.