রহস্যময় সৌর বালক
ঘটনাটি ২০১৬ সালের,পাকিস্তানের বালুচিস্তানের একটি গ্রামে ১৩ বছর বয়সী শোয়েব এবং ৯ বছর বয়সী রাশেদ ছিল রহস্যময় দুই ভাই।
দিনের বেলা সূর্যের আলোতে তারা স্বাভাবিক দুটি শিশু কিন্তু রাত হলে দুজনেই সম্পূর্ণ প্যারালাইজড হয়ে যেত। হাটা-চলা,খাওয়া-দাওয়া এমনকি কথা পর্যন্ত বলতে পারতো না।পরদিন সূর্য উঠলে আবার সব ঠিকঠাক এমনকি দিনের বেলা অন্ধকার ঘরেও তাদের সমস্যা হবে না।তাদের এই সমস্যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে রীতিমতো এক গোলক ধাঁধার সৃষ্টি করে।পাকিস্তানের এই অদ্ভুত দুই ভাইকে পৃথিবী চিনে সোলার কিডস নামে।
শোয়েব ও রাশেদের পিতামাতা হলেন আপন চাচাতো ভাই বোন। তাদের আটজন সন্তানের মধ্যে দু'জন খুব অল্প বয়সেই মারা যায়।জীবিত সন্তানদের মধ্যে ৩ জনের দেহ কেবল দিনের বেলাতেই সক্রিয় থাকে।শোয়েব ও রাশেদ ছাড়া আক্রান্ত অন্যজনের বয়স মাত্র ১ বছর।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক গবেষকের একটি দল পৌছে যায় তাদের গ্রামে।সংগ্রহ করে এলাকার মাটি,বায়ু এবং দুই ভাইয়ের রক্তের নমুনা। নমুনা পরীক্ষার পর তারা জানান লক্ষণগুলো অনেকটা মায়াসথেনিক সিনড্রমের মতো।তাই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির পেশি বয়স বৃদ্ধির সাথে দূর্বল হয়ে থাকে। এটি একটি জিনগত রোগ যার কারণে দেহের মাংসপেশি ও স্নায়ুর জাংশনে গোলযোগ দেখা দেয়। জাংশনের কার্যক্রমের জন্য যে প্রোটিন দায়ী তা নির্দিষ্ট সময় পরপর কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে রোগী সেই সময় ধীরে ধীরে প্যারালাইজড হয়ে যায়।চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে নিউরো-ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে চিকিৎসা শুরু করেন দুই ভাইয়ের।কৃত্রিমভাবে রাসায়নিক প্রয়োগে তাদের স্নায়ু ও পেশিতে সংকেত প্রেরণ করা হয়।এই চিকিৎসাতেই আশার আলো দেখতে পায় শোয়েব ও রাশেদ।তারা প্রথমবারের মতো রাতের বেলাতেও নিজের পায়ে চলতে সক্ষম হয়।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
ডাঃ মোঃ জসিম উদ্দীন
ডি ভি এম, এম এস সি
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়
No comments: